Bengali article on the terrorism and tragedy, and ensuing knee-jerk reaction, followed by war drumbeat. Here’s the analysis big media won’t dare to do. They are afraid of losing their ratings and profit. We aren’t.
সন্ত্রাসকে সন্ত্রাস বলবো। ইসলামী সন্ত্রাসকে মানবসভ্যতার ভয়ংকর শত্রু বলে চিহ্নিত করবো। পুলওয়ামার শহীদ সেনাদের জন্যে চোখের জল ফেলবো। তাঁদের পরিবারের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো। দেশপ্রেম আমারও কম নয়। আপনাদের অনেকের থেকে বেশি। সে আমি যেখানেই থাকিনা কেন। স্বর্গে, নরকে, বা পৃথিবীতে।

আমি কমিউনিস্ট নই। কংগ্রেসি নই। মাওবাদী নই। বিজেপি একেবারেই নই। জঙ্গি হিন্দুবাদী আর এস এস — ছিলাম বহুকাল। ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছি। ছেড়ে দিয়ে আসার পরে অনেক বেশি হিন্দু, ভারতীয় আর বাঙালি হয়েছি। যত বয়েস বাড়ছে, তত বেশি করে মিথ্যা ও বঞ্চনার রাজনীতি, ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতি চোখের সামনে পরিষ্কার হয়ে উঠছে।
কয়েকটা কথা খুব সোজাসুজি বলবো।
কোনো মিডিয়া যুদ্ধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেনা। কোনো মিডিয়া ঘৃণা ও হিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেনা। কোনো মিডিয়া এই অন্ধ দেশপ্রেম নামক হাঁটুঝাঁকানি রগরগে “রক্ত চাই” হিন্দু জিহাদের বিরুদ্ধে জোরগলায় প্রতিবাদ জানাবেনা। তাদের রেটিং পড়ে যাবে। মুনাফার ক্ষতি হবে মারাত্মক।
কংগ্রেস ঠিক এই আমেরিকার ডেমোক্রেটিক পার্টির মতোই সফ্ট যুদ্ধবাদিতার রাস্তা নেবে। এলিট লিবারালরা চুপ করে থাকবে — কারণ কোনো আঁচই তাদের গায়ে লাগেনা। আমার বেশ কিছু বুদ্ধিমান লেফটি বন্ধু এখনই রক্তের বদলে রক্ত চাই খেলায় নেমে পড়েছে। মগজ শুধু বোকাদের ধোলাই হয়নি। বামপন্থীদেরও হয়েছে।
সন্ত্রাসী হামলা হলে শাসকশ্রেণীর খুব সুবিধে। তার ওপর যদি আবার পাকিস্তানের দিক থেকে আসে। কাশ্মীরের দিক থেকে আসে। ভোটের ঠিক তিন মাস আগে চল্লিশজন জওয়ান খুন হলে মোটামুটিভাবে বলে দেওয়া যায়, ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতায় থাকবে। এবং তারপরে যা খুশি তাই করবে। যারা বেসুরে গাইবে, তাদের হয় শারীরিকভাবে, নয়তো মানসিকভাবে নির্যাতন করা হবে। জেল, জরিমানা, কিংবা ট্রোল শিকার হবে তারা। হ্যাকিং হবে।
দেশদ্রোহী আখ্যা দেওয়া হবে তাদের। এবং তাদের নিজেদের পরিবার, সমাজ ও বন্ধুরাই তাকে ত্যাগ করে চলে যাবে।
কোনো তদন্ত হবেনা। কোনো প্রশ্ন উঠবেনা। কোনো চ্যালেঞ্জ কারুকে মোকাবিলা করতে হবেনা।
কখনো জিজ্ঞেস করা হবেনা, যে কাশ্মীরে ভীষণ নিরাপত্তার ঘেরাটোপ, যেখানে মাছিও গলেনা, সেখানে কীভাবে সন্ত্রাসীরা চল্লিশজন অস্ত্রধারী সৈনিককে হত্যা করে চলে যায়। আমরা জানতে চাইবোনা। কারণ, আমরা এখন ক্রুদ্ধ। আমরা এখন “শান্তি চাইনা, যুদ্ধ চাই।”
ঠিক যেমন আমরা কখনো জিজ্ঞেস করিনি, মুম্বাই ব্ল্যাক ক্যাট সিকিউরিটির তাজ হোটেলে সন্ত্রাসীরা কীভাবে মেশিন গান নিয়ে ঢুকতে পেরেছিলো। ঠিক যেমন এই আমেরিকায় কেউ জিজ্ঞেস করেনি, চার চারটে এয়ারপোর্টের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা এড়িয়ে কীভাবে ৯/১১ সন্ত্রাসীরা গলে ঢুকেছিলো। জিজ্ঞেস করলে আপনাকে দেশদ্রোহী বলা হবে। সরকার বলবে, মিডিয়া বলবে, প্রিজন কর্পোরেশনের মালিকরা উল্লসিত হবে, এবং আপনার নিজের লোকেরাই আপনাকে কুষ্ঠরোগীর মতো দেখবে।
কখনো জিজ্ঞেস করা হবেনা, ১৯৪৭ থেকে এই ২০১৯ — এতগুলো বছরেও কেন কাশ্মীর সমস্যার সমাধান করা হলোনা। কেন ভারত ও পাকিস্তান এবং তাদের পিছনে পুতুলনাচের কারিগর আমেরিকা ও সি আই এ — কাশ্মীরকে ঠিক রাজনৈতিক ব্রিজ খেলার তুরুপের তাসের মতো ব্যবহার করে এসেছে। ঠিক যেমন মধ্যপ্রাচ্যে ইজরায়েল ও আমেরিকা প্যালেস্টাইনকে আর এক আশ্চর্য শক্তিশালী তুরুপের তাসের মতো হাতের তেলোয় লুকিয়ে রেখেছে, এবং যখন খুশি ব্যবহার করেছে।
কেউ জিজ্ঞেস করবেনা, কেন কাশ্মীর ও প্যালেস্টাইনে মানুষ এতো গরিব। এতো অসহায়। এতো বঞ্চিত। শোষিত কথাটা ব্যবহার করলামনা, কারণ কমিউনিস্টরা কথাটাকে একেবারে চিবিয়ে ছিবড়ে করে দিয়েছে। ও কথাটার আসল মানে আর কেউ বোঝেনা।
সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসীরা ভীষণ দারিদ্র্য থেকেই রক্তবীজের মতো জন্মায়, বড় হয়। তাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় ধর্মান্ধরা। তাদের মগজ ধোলাই করে ধর্মের নামে, দেশপ্রেমের নামে। তারপরে সেই সন্ত্রাসীরা হয় নিরীহ মানুষদের, শিশুদের, নারীদের, আর নয়তো পুলওয়ামার জওয়ানদের মতো টার্গেট খুঁজে বের করে।
তারপরে, ঘৃণা, হিংসা ও যুদ্ধের ব্যবসায়ীরা সে সন্ত্রাসকে কাজে লাগিয়ে আরো অনেক বেশি সন্ত্রাস শুরু করে। তখন চল্লিশজন নয়, চারশো জন, চার হাজার জন, চল্লিশ হাজার জন নিরীহ মানুষ — পুরুষ, নারী ও শিশু শেষ হয়ে যায়। অনেকে হাত পা চোখ নাক পেট হারিয়ে বাকি জীবন কাটায়।
কিন্তু তখন সে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসকে সন্ত্রাস বলা হয়না। বলা হয় দেশপ্রেম। প্রতিরক্ষা। প্রতিশোধ।
তখনও কেউ কোনো প্রশ্ন করেনা। যারা গান্ধীকে মেরেছিলো, তারা গান্ধীবাদী দেশপ্রেমিক আখ্যা পায়। মানুষ তাদের আবার ভোট দেয় লাইনে দাঁড়িয়ে।
________________________
নেলসন ম্যান্ডেলা বলেছিলেন, “Real leaders must be ready to sacrifice all for the freedom of their people” — প্রকৃত নেতারা তাদের মানুষের স্বাধীনতার জন্যে যেন সবকিছু ত্যাগ করতে প্রস্তুত থাকে। হাল্লা রাজার মন্ত্রী যুদ্ধে যায়নি। দূর থেকে দেখেছিলো। তার সঙ্গে ছিল অদৃশ্য হয়ে যাওয়া ব্ল্যাক ম্যাজিশিয়ান। আর খেতে না পাওয়া সৈন্যরা গিয়েছিলো যুদ্ধে।
সে অন্যায় যুদ্ধ বন্ধ করেছিল দুই সাধারণ মানুষ।
______________________________________________
ব্রুকলিন, নিউ ইয়র্ক
১৫ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯